রেসাস ফ্যাক্টর কি এবং কাকে বলে | Rh ফ্যাক্টরের গুরুত্ব

 

রেসাস ফ্যাক্টর কি এবং  কাকে বলে | Rh ফ্যাক্টরের গুরুত্ব

রেসাস ফ্যাক্টর কি এবং কাকে বলে

১৯৪০ সালে ল্যান্ডস্টেইনার ও উইনার Rh ফ্যাক্টর আবিষ্কার করেন। রেসার্স বানরের (Macaca rhesus) রক্ত খরগোসের খরগোসের RBC-কে দেহে প্রবেশ করানোর পর খরগোসের সিরামে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি জমাটবদ্ধ করে দেয়। এই অ্যান্টিবডি অধিকাংশ শ্বেতকায় ব্যক্তির RBC-কে জমাটবদ্ধ করে দেয়। এ ফলাফল থেকে বিজ্ঞানী দু'জন ধারণা করেন যে, মানুষের লোহিত কণিকার ঝিল্লিতে রেসাস বানরের লোহিত কণিকার ঝিল্লির মতো এক প্রকার অ্যান্টিজেন আছে। রেসাস বানরের নাম অনুসারে ঐ অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর বা (Rh factor) বলে।

লোহিত কণিকার প্লাজমা মেমব্রেনে Rh ফ্যাক্টরের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তগ্রুপকে দু'টি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। যথা –

  • (১) Rh+ : R.B.C-তে Rh ফ্যাক্টর থাকে।
  • (২) Rh- : R.B.C-তে Rh ফ্যাক্টর থাকে না ।

রেসাস ফ্যাক্টরের  (Rh ফ্যাক্টরের) গুরুত্বঃ

(১) রক্ত সঞ্চারনজনিত গুরুত্বঃ মানুষের দেহে রক্ত সঞ্চারনের সময় দাতা-গ্রহীতা উভয়ের Rh ফ্যাক্টর পরীক্ষা করা হয়। Rh¯ রক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিকে Rh+ বিশিষ্ট রক্ত দিলে প্রথমবার গ্রহীতার দেহে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না, কিন্তু গ্রহীতার রক্ত রসে ক্রমশ Rh+ অ্যান্টিজেনের বিপরীতে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়। এই অ্যান্টিবডিকে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর বলে। পরে যদি ঐ একই গ্রহীতার দেহে Rh+ রক্ত প্রবেশ করানো হয় তবে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টরের প্রভাবে দাতার RBC-গুলো জমাটবদ্ধ হয়ে যায় এবং তাতে রক্ত গ্রহীতার মৃত্যু হতে পারে। তবে একবার রক্ত গ্রহণের পর যদি গ্রহীতা আর ঐ রক্ত গ্রহণ না করে, তা হলে আস্তে আস্তে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টরের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং গ্রহীতা স্বাভাবিক রক্ত ফিরে পায়।

(২) বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন সংক্রান্ত গুরুত্বঃ গর্ভবতী মেয়েদের জন্য Rh ফ্যাক্টর খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন Rh মেয়ের সাথে Rh+ ছেলের বিয়ে হলে তাদের প্রথম সন্তান হবে Rh', কারণ Rh+ একটি প্রকট বৈশিষ্ট্য। ভ্রূণ অবস্থায় সন্তানের Rh+ ফ্যাক্টরযুক্ত R.B.C অমরার মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের রক্তে পৌছে, ফলে মায়ের রক্তে Rh হওয়ায় তার সিরামে অ্যান্টি-Rh উৎপন্ন হয়। অ্যান্টি Rh মায়ের রক্ত থেকে অমরার মাধ্যমে ভ্রূণের দেহে প্রবেশ করলে ভ্রূণের R.B.C-কে ধ্বংস করে, ফলে ভ্রূণ নষ্ট হয় এবং গর্ভপাত ঘটে। জন্মগ্রহণ প্রাপ্ত শিশু জীবিত থাকলেও তার দেহে প্রচণ্ড রক্তস্বল্পতা এবং জন্মের পর জন্ডিস রোগ হয়। এ অবস্থাকে ইরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস বলে। প্রথমবার গর্ভধারণে যথেষ্ট মাত্রায় অ্যান্টিবডি উৎপন্ন না হওয়ায় শিশুর কোন ক্ষতি হয় না। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ