অ্যারোমেটিক যৌগ কাকে বলে ? অ্যারোমেটিক যৌগের বৈশিষ্ট্য


অ্যারোমেটিক যৌগ কাকে বলে ? অ্যারোমেটিক যৌগের বৈশিষ্ট্য

অ্যারোমেটিক যৌগ কাকে বলে ?

যেসব যৌগের আনবিক সংকেত বা গঠনে (4n +2) সংখ্যক পাই (π) ইলেকট্রন অনবরত সঞ্চরনশীল অসম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে, সেসব যৌগ সমূহকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। অ্যারোমেটিক যৌগের বিশেষ ধর্মকে অ্যারোমেটিসিটি বলা হয়।

উদাহারনঃ ন্যাফথ্যালিন (C10H8), পাইরোল (C4H4NH) , ফিউরান (C4H4O), থায়োফিন (C4H4S) ইত্যাদি জৈব যৌগ সমূহ হচ্ছে অ্যারোমেটিক যৌগের উদাহারন। প্রথম বন্ধনীর ভিতরে যৌগের সংকেত দেওয়া হয়েছে।

অ্যারোমেটিক যৌগের বৈশিষ্ট্য

  • অ্যারোমেটিক যৌগ বদ্ধ শিকল যুক্ত ও সমতলীয় আকারের হয়ে থাকে।
  • অ্যারোমেটিক যৌগে (4n +2) সংখ্যক পাই (π) ইলেকট্রন থাকে।
  • অ্যারোমেটিক যৌগের আনবিক গঠন সুস্থিত, স্থায়ী ও অসম্পৃক্ত হয়।
  • অ্যারোমেটিক যৌগে আনবিক সংকেতে কার্বনের সাধারণত ৬ টি পরমাণু থাকে এবং কার্বনের শতকরা পরিমাণ অন্যান্য মৌল থেকে বেশি হয়ে থাকে।
  • বিভিন্ন ধরণের অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনে কমপক্ষে একটি বেনজিন বলয় থাকে।
  • অ্যারোমেটিক যৌগে ইলেকট্রোফিলিক প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে।
  • হ্যালোজেনেশন, সালফোনেশন ও ফ্রিডেল ক্রাফট অ্যারোমেটিক যৌগের অন্যতম প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ার ধরন।
  • ফ্রি রেডিকেল মেকানিজম পদ্ধতির মাধ্যমে অ্যারোমেটিক যৌগে সংযোজন বিক্রিয়া ঘটে।

অ্যারোমেটিক যৌগ চেনার উপায়

যেসব যৌগ হাকেল নীতি মেনে চলে তারাই অ্যারোমেটিক যৌগ। হাকেল নীতি অনুসারে যেসব যৌগে (4n +2) সংখ্যক পাই (π) ইলেকট্রন অনুরণন অবস্থায় থাকবে, সেসব যৌগ সমূহকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা যাবে। অর্থাৎ, হাকেল নীতি প্রয়োগ করে অ্যারোমেটিক যৌগ চেনা যাবে। যেমন, ন্যাফথ্যালিন (C10H8) জৈব যৌগটি একটি অ্যারোমেটিক যৌগ। কারন, ন্যাফথ্যালিনে (4n +2) সংখ্যক পাই (π) ইলেকট্রন আছে। এখানে, n হচ্ছে কোনো একটি জৈব যৌগে বেনজিন বলয়ের সংখ্যা। নিচের ছবিতে ন্যাফথ্যালিনের গাঠনিক সংকেত দেখানো হল। ন্যাফথ্যালিনে ৫ টি দ্বিবন্ধনে মোট ১০ টি পাই ইলেকট্রন ও ২ টি বেনজিন বলয় রয়েছে। তাহলে, হাকেল নীতি অনুসারে n=2, (4x2 + 2) = 10, অর্থাৎ ১০ টি পাই ইলেকট্রন ন্যাফথ্যালিনে আছে। অতএব, ন্যাফথ্যালিন একটি অ্যারোমেটিক যৌগ, যা হাকেল নীতি অনুসারে প্রমানিত।

ন্যাফথ্যালিনের গাঠনিক সংকেত
ন্যাফথ্যালিনের গাঠনিক সংকেত


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ