নীতিবিদ্যা কি । নীতিবিদ্যা কাকে বলে । নীতিবিদ্যা শব্দের উৎপত্তি

 

নীতিবিদ্যা কি । নীতিবিদ্যা কাকে বলে । নীতিবিদ্যা শব্দের উৎপত্তি

নীতিবিদ্যা কি

নীতিবিদ্যা মানব আচরণের চরম আদর্শ। এ আদর্শ লাভের সহায়ক নৈতিক নিয়মগুলো নির্ধারণপূর্বক মানুষের আচরণকে ভালো কি মন্দ বিচার করে। এটি সমাজে বসবাসকারী মানব আচরণ সম্পর্কীয় একটি আদর্শনিষ্ঠ বিদ্যা নীতিবিদ্যার (ethics) কাজ হলো পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে মানুষের আচরণকে একটি আদর্শ অনুযায়ী কতগুলো নিয়মের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা। তাই মানুষের ভালো-মন্দ নীতিবিদ্যায় আলোচনা করে বিধায় দর্শনে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

ব্যুৎপত্তিগত অর্থে নীতিবিদ্যা

নীতিবিদ্যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Ethics. Ethics কথাটি এসেছে গ্রিক শব্দ Ethica থেকে। Ethica শব্দটি এসেছে Ethos থেকে, যার অর্থ চরিত্র, রীতিনীতি বা অভ্যাস। Ethics বা নীতিবিদ্যাকে Moral Philosophy বা নীতি দর্শনও বলা হয়। কারণ Moral শব্দটি ল্যাটিন শব্দ Mores থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো রীতিনীতি বা অভ্যাস। সমাজে স্বীকৃত প্রথা বা রীতিনীতি অনুসরণ করে আমরা যে অভ্যাস গঠন করি এবং সেই অভ্যাসের মাধ্যমে যে চরিত্র গঠিত হয় তাই হচ্ছে নৈতিক আচরণ। তাই নীতিবিদ্যাকে মানুষের রীতিনীতি বা অভ্যাসজনিত আচরণের বিজ্ঞানও বলা যেতে পারে।

নীতিবিদ্যা কাকে বলে

নীতিবিদ্যা হলো মানুষের আচরণ সম্পর্কীয় বিদ্যা। যে বিদ্যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের আচরণের ন্যায়ত্ব অন্যায়ত্ব, ভালোত্ব-মন্দত্ব, ঔচিত্য-অনৌচিত্য ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করে তাকে নীতিবিদ্যা বলে

বিভিন্ন নীতিবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে নীতিবিদ্যার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। যেমন :

উইলিয়াম লিলি (William Lillie) এর মতে, “নীতিবিদ্যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের আচরণ সম্পর্কীয় একটি আদর্শনিষ্ট বিজ্ঞান, যে বিজ্ঞান মানুষের আচরণকে উচিত কী অনুচিত, ভালো কি মন্দ তা অনুরূপভাবে বিচার করে।

উইলিয়াম কে. ফ্রাংকিনা (William K. Frankena)-এর মতে, “নীতিবিদ্যা দর্শনের এমন একটি শাখা যা নৈতিকতা, নৈতিক সমস্যা ও নৈতিক অবধারণ সম্পর্কীয় এক ধরনের দার্শনিক চিন্তাভাবনা।”

অধ্যাপক ম্যাকেঞ্জি (Mackenzie) এর মতে, “নীতিবিদ্যা হলো আচরণের মঙ্গল বা ঔচিত্যের আলোচনা।”

পি. ডব্লিউ. টেলর (P.W.Taylor) বলেন, “নীতিবিদ্যা হলো নৈতিকভাবে প্রকৃতি এবং ভিত্তি সম্পর্কিত দার্শনিক অনুসন্ধান।"

গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল (Aristotle) এর মতে, “যে বিদ্যা সমাজে বসবাসকারী মানুষের ভালো-মন্দ বিচার করে তাকে নীতিবিদ্যা বলে।"

অধ্যাপক হসপার্স (Hospers) এর মতে, “নীতিবিদ্যা হলো নৈতিক সমস্যাবলির আলোচনা।”

পরিশেষে বলা যায় যে, যে বিজ্ঞান মানব জীবনের চরম আদর্শ এবং ঐ আদর্শ লাভের সহায়ক নৈতিক নিয়মগুলো নির্ধারণমূলক মানুষের আচরণকে ভালো কী মন্দ বিচার করে তাকে নীতিবিদ্যা বলে। নীতিবিদ্যা দর্শনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ