SWOT বিশ্লেষণ কি | SWOT বিশ্লেষণ নিয়ে বিশদ আলোচনা

  

SWOT বিশ্লেষণ কি

SWOT বিশ্লেষণ কি

SWOT শব্দটি Strength (শক্তি), Weakness ( দুর্বলতা), Opportunity (সুযোগ) এবং Threats (হুমকি) এর আদ্যাক্ষর নিয়ে গঠিত। SWOT বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোম্পানির শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকি বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্বের অন্যতম গবেষক Edmund P. Larned এবং অন্যান্য সহ-গবেষকগণ ১৯৬৯ সালে SWOT- এর ধারণাটি তুলে ধরেন। যার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ এবং হুমকি বিশ্লেষণ করা যায়।

এ প্রসঙ্গে Philip Kotler & Gary Armstrong, "SWOT analysis is an overall evaluation of the company's strengths, weaknesses, opportunities and threats." অর্থাৎ, কোম্পানির শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকিসমূহের সামগ্রিক মূল্যায়নকে SWOT বিশ্লেষণ বলে।

Stanton, Etzel এবং Walker- এর মতে, "SWOT analysis is identifying and evaluating an
onganization most significant strengths weakness, opportunities and threats." SWOT বিশ্লেষণ হলো একটি সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ এবং হুমকিসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং মূল্যায়ন।

পরিশেষে বলা যায়, SWOT বিশ্লেষণ হচ্ছে কোম্পানির শক্তি, দুর্বলতা, হুমকি ও সুযোগ চিহ্নিত ও মূল্যায়ন করা এবং এগুলোর মধ্যে সমন্বয়সাধন করা। নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে SWOT বিশ্লেষণ দেখানো হলো:

অভ্যন্তরীণ

শক্তি

অভ্যন্তরীণ অভ্যন্তরীণ সামর্থ্য যা কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনে সাহায্য করে।

দুর্বলতা

অভ্যন্তরীণ সীমাবদ্ধতা যা কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে।

বাহ্যিক

সুযোগ

বাহ্যিক উপাদান যা কোম্পানির সুবিধা অনুসন্ধানে সাহায্য করে।

হুমকি

বর্তমানে ও উদীয়মান বাহ্যিক উপাদান যা কোম্পানির কার্যক্রয়ে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে।

 

ইতিবাচক

নেতিবাচক

Source: Philip Kotler & Gary Armstrong, Principles of Marketing, 13th edn., 2010, P-54.

১. শক্তি (Strength)

একটি কোম্পানির শক্তি বলতে ঐ কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনের সামর্থ্যকে বুঝায়। এ প্রসঙ্গে Philip Kotler & Gary Armstrong , "Strengths include internal capabilities, resources, and positive situational factors that may help the company to serve its customers and achieve its objectives." অর্থাৎ, শক্তি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সামর্থ্য, সম্পদ এবং ইতিবাচক পরিস্থিতিগত উপাদান যা কোম্পানিকে তার ক্রেতাদের সেবা দানে এবং উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা করে। যেমন- ব্যবসায়িক সুনাম, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, যোগ্য নেতৃত্ব, আর্থিক সচ্ছলতা ইত্যাদি।

২. দুর্বলতা (Weakness)

দুর্বলতা বলতে একটি কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাকে বুঝায়। এ প্রসঙ্গে Philip Kotler & Gary Armstrong বলেন, "Weakness include internal limitations and negative situational factors that may interfere with the company's performance." অর্থাৎ, দুর্বলতা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সীমাবদ্ধতা এবং নেতিবাচক পরিস্থিতিগত উপাদান যা কোম্পানির কার্যসম্পাদনে বাধা সৃষ্টি করে। একটি কোম্পানি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্বল হতে পারে। যেমন- আর্থিক সমস্যা, ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা, প্রযুক্তির অভাব, অদক্ষ কর্মী ইত্যাদি।

৩. সুযোগ (Opportunity)

লাভজনকভাবে কাজ করা সম্ভব কোম্পানির জন্য এমন ক্ষেত্রগুলোই সুযোগ। এ প্রসঙ্গে Philip Kotler & Gary Armstrong বলেন, "Opportunities are favorable factors or trends in the external environment that the company may be able to exploit to its advantage." অর্থাৎ, বাজারজাতকরণ সুযোগ হচ্ছে বাহ্যিক পরিবেশের অনুকূল উপাদান বা গতিধারা যা কোম্পানিকে সুবিধা অনুসন্ধানে সাহায্য করে। বাজার সুযোগের তিনটি প্রধান বিষয় হচ্ছে-

  • (i) নির্ধারিত সময়ে পণ্য ও সেবা সরবরাহ।
  • (ii) শ্রেয়তর পন্থায় বর্তমান পণ্য ও সেবা সরবরাহ।
  • (iii) সম্পূর্ণ নতুন উদ্ভাবিত পণ্য ও সেবা সরবরাহ।

৪. হুমকি (Threat)

হুমকি হচ্ছে ঐ সকল বাধা বা প্রতিকূল ঘটনা যা স্বাভাবিক চলার পথে প্রতিবন্ধকতা বা জটিলতা তৈরি করে। এ প্রসঙ্গে Philip Kotler & Gary Armstrong বলেন, "Threats are unfavorable external factors trends that may present challenges to performance." অর্থাৎ, হুমকি হচ্ছে প্রতিকূল বাহ্যিক উপাদান বা গতিধারা যা কার্যক্রমে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। হুমকি বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যথা:- প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করতে পারে বা বিকল্প পণ্য বা মূল্য হ্রাসসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। সেলফোনের আবিষ্কার যেমন ল্যান্ডফোন ও হাতঘড়ির জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়া জনস্বার্থে সরকারি বিভিন্ন বিধিনিষেধ অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। যেমন- পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধকরণ ইত্যাদি।

পরিশেষে বলা যায়, প্রতিটি কোম্পানি অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বিশ্লেষণ করে শক্তি ও দুর্বলতা এবং বাহ্যিক পরিবেশ বিশ্লেষণ করে সুযোগ ও হুমকি নির্ধারণ করে থাকে। এর লক্ষ্য হচ্ছে শক্তিকে আকর্ষণীয় সুযোগের সাথে সমন্বয়সাধন এবং দুর্বলতাকে দূরকরণের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাসকরণ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ