ফজরের নামাজ | কয় রাকাত, নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজ নিয়ে হাদিস ও অন্যান্য

 

ফজরের নামাজ | ফজরের নামাজ কয় রাকাত, নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজ নিয়ে হাদিস ও অন্যান্য

ফজরের নামাজ কয় রাকাত

ফজরের নামাজ মোট ৪ রাকাত।

  • ২ রাকআত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।
  • ২ রাকআত ফরয।

ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের ফযীলত নিয়ে হাদিস

ফজর নামাজের (Fazr Prayer) দুই রাকআত সুন্নাতের ফযীলত সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হযরত নবী করীম (সঃ) নফল নামাজ সমূহের মধ্যে কোন নামাজের প্রতিই এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন না, যত না বেশী লক্ষ্য রাখতেন ফজরের দুই রাকআত সুন্নতের প্রতি। (বুখারী ও মুসলিম)

হযরত আয়েশা (রাঃ) আরও বলেন, হযরত রাসূলে আকরাম (সঃ) ইরশাদ করেছেন, ফজরের (ফরযের) পূর্বে দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার সমস্ত জিনিস অপেক্ষা উত্তম। (মুসলিম)

ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত

نويت أن أصلى الله تعالى ركعتى صـلـوة الـفـجـر سـنة رسول
الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله أكبر

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকআতাই সলাতিল ফাজরি ছুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়তঃ আমি কেবলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করিতেছি, আল্লাহু আকবার।

ফজরের দুই রাকাত সুন্নত আদায় করার নিয়ম

প্রথম রাকাত আদায় করার নিয়ম

প্রথমে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানের দিকে দৃষ্টি রেখে নিঃশব্দে জায়নামাজের দোয়া পাঠ করবে। তারপর নামাজের নিয়ত করবে। আরবীতে নিয়ত করা ভাল তবে তা জরুরী নয়। বাংলায় নিয়ত করলেও হবে। এবং এতে নামাজের সওয়াব কম হবে না। নিয়ত করা অর্থাৎ মনে মনে এ সংকল্প করবে যে, আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত নামাজ আদায় করার জন্য নিয়ত করলাম। অতঃপর উভয় হাতের পেট কিবলার দিক করে পুরুষেরা কান পর্যন্ত এবং নারীরা কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে। হাত এমন ভাবে উঠাবে যাতে পুরুষের ক্ষেত্রে হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলি কানের লতি বরাবর থাকে এবং অঙ্গুলির মাথা কানের উপরে থাকে; কিন্তু মাথার উপরে নয়। আর নারীদের ক্ষেত্রে হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলি কাঁধ বরাবর এবং আঙ্গুলের মাথা কাঁধের উপরে থাকে, কিন্তু কানের উপরে যাতে না উঠে।

হাত উঠানোর পর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার (তাকবীরে তাহরীমা) বলে পুরুষেরা নাভির নীচে এবং নারীরা সিনার উপরে ডান হাতের কবজি বাম হাতের কবজির উপর স্থাপন করবে পুরুষেরা ডান হাতের বৃদ্ধা ও তর্জুনী আঙ্গুল দিয়ে বাম হাতের কবজিকে শক্ত করে ধরবে।

তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত বাঁধার পর প্রথমে সানা, অতঃপর আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ চুপে চুপে পাঠ করবে। তারপর নিঃশব্দে সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে চুপে চুপে আমীন বলবে। তারপর যে কোন একটি সূরা বা কুরআনের যে কোন জায়গা হতে ছোট হলে কমপক্ষে তিন আয়াত, আর বড় হলে কমপক্ষে এক আয়াত পাঠ করবে। তারপর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে রুকু করবে। রুকুতে দুই হাত দ্বারা দুই হাঁটুকে শক্ত করে ধরবে এবং হাতকে তীরের মত সোজা রাখবে। এ সময় মাথা, পিঠ ও নিতম্ব এক বরাবর রাখবে এবং পিঠকে কুঁজো ও মাথাকে নীচু করবে না। নারীরা তাদের রুকু করার নিয়ম অনুযায়ী রুকু করবে। অতঃপর রুকুতে নিঃশব্দে তিন, পাঁচ অথবা সাতবার (বিজোড়) রুকুর তাসবীহ ধীরস্থিরভাবে পাঠ করবে। অতঃপর নিঃশব্দে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে যাতে পিঠ ও মাথা সোজা হয়ে যায়। হাত নীচের দিকে ছেড়ে সোজা রাখবে। অতঃপর চুপে চুপে রাব্বানা লাকাল হামদ্ বলবে। তারপর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যাবে। সিজদায় গিয়ে দুই হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দুই কানের লতি বরাবর রাখবে তারপর মাটিতে প্রথমে নাক অতঃপরু কপাল রাখবে। মাথা, পিঠ ও নিতম্ব সম্পূর্ণ সোজা রাখবে, পিঠকে কুঁজো করবে না । অতঃপর সিজদায় গিয়ে নিঃশব্দে তিন, পাঁচ অথবা সাতবার সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা পাঠ করবে। তারপর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে স্থির হয়ে বসবে যাতে মাথা ও পিঠ সোজা থাকে। সিজদা হতে মাথা উঠানোর সময় মাটি থেকে প্রথমে কপাল তারপর নাক উঠাবে। অতঃপর পুনরায় নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে এবং পূর্বের ন্যায় সিজদায় নিঃশব্দে তিন, পাঁচ বা সাতবার সিজদার তাসবীহ পাঠ করবে।

তারপর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে সিজদা হতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। এক রাকআত নামাজ পূর্ণ হল।

দ্বিতীয় রাকাত আদায় করার নিয়ম

প্রথম রাকাত শেষ হওয়ার পর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে সিজদা হতে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। সিজদা হতে উঠার সময় মাটি হতে প্রথমে কপাল, তারপর নাক, তারপর হাত উঠাবে। হাত হাটুর উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। দু’হাত মাটিতে ভরদিয়ে দাঁড়াবে না, তবে কোন ওযর থাকলে মাটিতে হাত দিয়ে দাঁড়াতে পারবে। দাঁড়িয়ে পূর্বের মত পুরুষেরা নাভির নীচে এবং নারীরা বুকের উপর হাত বাঁধবে। অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করে অন্য একটি সূরা বা কুরআনের প্রথম রাকআতে যে কিরাত বা সুরা পাঠ করা হয়েছে তার পরবর্তী যে কোন স্থান হতে বড় হলে কমপক্ষে এক আয়াত, আর ছোট হলে কমপক্ষে তিন আয়াত পাঠ করবে। তারপর পূর্বের মত নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে রুকু করবে এবং রুকুতে তিন, পাঁচ বা সাতবার তাসবীহ পাঠ করবে। তারপর পূর্বের মত নিঃশব্দে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে রুকু হতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে।

তারপর নীরবে রাব্বানা লাকাল হামদ্ বলবে। তারপর প্রথম রাকাতের মত দুই সিজদা করবে। দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসবে। সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। উভয় সিজদাতে পূর্বের মত তিন, পাঁচ বা সাতবার সিজদার তাসবীহ পাঠ করবে । দ্বিতীয় রাকআতে দুই সিজদার পর নিঃশব্দে আল্লাহু আকবার বলে সিজদা হতে উঠে বসবে। বসার নিয়ম হচ্ছে- ডান পায়ের পাতাকে খাড়া রেখে বাম পায়ের উপর বসবে। বসাবস্থায় দুই হাতের পাতা দুই উরুর উপর জানু বরাবর স্থাপন করবে এবং আঙ্গুলসমূহ একটু ফাকা রাখাবে। নারীরা তাদের বসার নিয়ম অনুযায়ী বসবে। পুরুষদের মত বসবে না। বসা অবস্থায় যথাক্রমে নিঃশব্দে আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করে প্রথমে ডানে, পরে বামে নীরবে আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাবে। ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত নামাজ আদায় পূর্ণ হল।

ফজরের দুই রাকাত ফরযের নিয়ত

نويت أن أصلى الله تعالى ركعتي صـلـوة الـفـجـر فرض الله
تعالى مـتـوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله أكبر 

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উসল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকয়াতাই সলাতিল ফাজরি ফারদুল্লাহি তা'আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলা নিয়ত : আমি বেকলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য ফজরের দুই রাকয়াত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করিতেছি। আল্লাহু আকবার।

[জামাআতের সাথে ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করা হলে নিয়ত করার সময় ফারদুল্লাহি তাআলা এর পর বলতে হবে ইকুতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম। অতঃপর বাকী আংশ বলবে।]

ফজরের দুই রাকাত ফরয আদায় করার নিয়ম

ফজরের দুই রাকাত ফরয নামাজ একাকী আদায় করলে দুই রাকআত সুন্নাত নামাজ যে নিয়মে আদায় করা হয়েছিল সে নিয়মেই আদায় করতে হবে। কিরাআত উচ্চস্বরে অথবা নিঃশব্দেও পাঠ করা যাবে। ইকামত দেয়া জরুরী নয়। ইকামত ইচ্ছে করলে দেয়া যাবে, আবার না দিলেও কোন ক্ষতি নেই। আর জামাআতের সাথে আদায় করার সময় নিম্নলিখিত নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হবে।

ফজরের দুই রাকাত ফরয নামাজ জামাআতের সাথে আদায় করার ক্ষেত্রে মুক্তাদিদেরকে নামাজের নিয়তসহ ইমামের ইক্তিদা করার নিয়ত করতে হবে, কিন্তু ইমামের ইমামতির নিয়ত করা জরুরী নয়। নিয়্যত করার পর ইমামের তাকবীর তাহরীমা বলার পর মুক্তাদিরাও দু'কান পর্যন্ত দুহাত উঠায়ে তাকবীর তাহরীমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে নাভীর উপর হাত বাঁধবে।

তারপর মুক্তাদিরা চুপে চুপে সানা পাঠ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে। মুক্তাদিরা ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা কিংবা অন্য কোন সূরা কিরাআত পাঠ করবে না। ইমামের কিরাআত মনযোগসহকারে শ্রবণ করবে। মুক্তাদিরা ইমামের তাকবীর বলার পর পর সমস্ত তাকবীর (অর্থাৎ আল্লাহু আকবার) যথাস্থানে বলবে। ইমাম যখন "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ" বলবে তখন মুক্তাদিরা সোজা হয়ে দাঁড়াবার সময় "রাব্বানা লাকাল হাম্দ" বলবে। মুক্তাদিরা রুকু সিজদায় নিঃশব্দে ভাবীহ পাঠ করবে। আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরাও নিঃশব্দে পাঠ করবে। কিন্তু কোন সূরা কিরাআত পাঠ করবে না। অন্যান্য সব কাজে মুক্তাদিরা ইমামের যথাযথ অনুসরণ করবে।

একাকী ফরযের নিয়ত করার পর জামাআত শুরু হলে করণীয়

মসজিদ কিংবা অন্য কোথাও একাকী ফজরের দুই রাকআত ফরয নামাজের নিয়ত করার পর নিকটে কয়েকজন মিলে যদি জামাআত দাঁড়ায় এমতাবস্থায় আপনি যদি দ্বিতীয় রাকাতের সিজদা না করে থাকেন তাহলে নামাজে যে অবস্থায় থাকবেন সে অবস্থায়ই ডান দিকে এক সালাম দিয়ে নামাজ ভংগ করে জামাআতে শরীক হয়ে যাবেন। আর যদি দ্বিতীয় রাকআতের সিজদা করে থাকেন তাহলে ঐ নামায় একাকীই পূর্ণ করবেন। এ অবস্থায় জামাআতে শরীক হবেন না। (বেহেশতী জেওর)

ফজরের ফরয নামাজ একাকী আদায় করার সময় সূরা কিরাআত উচ্চ স্বরেও পাঠ করা যায় এবং অনুচ্চ স্বরেও পাঠ করা যায়।

নামাজের শেষ বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে করণীয়

কেউ যদি ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত বা ফরয নামাজের দ্বিতীয় রাকআতে (শেষ বৈঠকে) তাশাহ্হুদ পাঠ করা পরিমাণ সময় বসার পর ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাতের জন্য সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যায় তাহলে স্মরণ হওয়া মাত্র বসে যাবে, যদিও সূরা কিরাআত পাঠ করে থাকে বা রুকুও করে থাকে। বসে ডান দিকে সালাম ফিরায়ে সাহু সিজদা করবে। তারপর আবার আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পাঠ করে উভয় দিকে সালাম ফিরায়ে নামাজ শেষ করবে। আর যদি তৃতীয় রাকআতের সিজদা করে থাকে তাহলে তৃতীয় রাকআত শেষে বসে যাবে এবং সাহু সিজদা আদায়সহ নামাজ শেষ করবে। চতুর্থ রাকআত আদায় করবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগীরী)

উল্লেখিত অবস্থায় যদি ফজরের দুই রাকাত ফরয নামাজের নিয়ত করা হয়ে থাকে তাহলে দুই রাকাত ফরয আদায় হয়ে যাবে, আর এক রাকআত বাতিল হবে। আর যদি ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত নামাজের নিয়ত করা হয়ে থাকে তাহলেও দুই রাকআত সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে এবং এক রাকআত বাতিল হবে। চতুর্থ রাকআত আদায় না করার কারণ হলো, ফজরের দুই রাকআত ফরযের পর কোন নফল নামাজ নেই এবং দুই রাকআত ফরযের পূর্বেও দুই রাকআত সুন্নাত ব্যতীত আর কোন সুন্নাত বা নফল নামাজ নেই।

যদি ফজরের দুই রাকআত সুন্নাত বা দুই রাকআত ফরয নামাজে এমন হয় যে, দ্বিতীয় রাকাতে (শেষ বৈঠকে) তাশাহহুদ পাঠ করা পরিমাণ সময় না বসেই ভুলক্রমে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াতে উদ্যত হয় তাহলে বসার নিকটবর্তী থাকাকালীন অবস্থায় তা স্মরণ হলে বসে যাবে এবং আত্তাহিয়্যাতু দরূদ শরীফ এবং দোয়া মাসূরা পাঠ করে সালাম ফিরাবে। এ অবস্থায় সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। আর যদি সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাবার পর স্মরণ হয়, কিংবা সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর, এমনকি তৃতীয় রাকআতের রুকু করার পরও যদি স্মরণ হয় তবুও বসে যেতে হবে। এ অবস্থায় সাহু সিজদার সাথে নামাজ পূর্ণ করবে, এতে নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে। আর যদি তৃতীয় রাকআতের সিজদা করার পর স্মরণ হয় তাহলে এ নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় নামাজ আদায় করতে হবে।

ফজরের সুন্নাত আদায় করার পূর্বেই জামাত শুরু হয়ে গেলে করণীয়

ফজরের দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ আদায় করা হয়নি, এ অবস্থায় যদি জামাআত শুরু হয়ে যায় এবং এ ধারণা থাকে যে, সুন্নত আদায় করেও জামাআতের শেষ বৈঠকের তাশাহহুদে শরীক হতে পারবে, তাহলে সুন্নত আদায় করে জামাআতে অংশ নিবে। কারণ ফজরের দুই রাকাত সুন্নাতের ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ রয়েছে। জামাআত শুরু হয়ে গেলে মসজিদের বারান্দায় কিংবা মসজিদের কোন কিছুর আড়ালে দাঁড়িয়ে সুন্নত নামাজ আদায় করে নিবে। কাতারের মাঝে দাঁড়িয়ে সুন্নত আদায় করা অথবা মসজিদে কোন আড়াল ছাড়া সুন্নত নামাজ আদায় করা মাকরূহে তাহরীমি। সুন্নাত আদায় করে জামাআতের শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদে অংশগ্রহণ করা যাবে না। এরূপ আশংকা থাকলে সুন্নত ছেড়ে দিয়ে জামাআতে অংশগ্রহণ করা যাবে। তবে ছেড়ে দেয়া সুন্নাত সূর্যোদয়ের পূর্বে আদায় করা জায়েয হবে না। সূর্য উদয় হয়ে কিছু উপরে উঠার পর হতে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত সুন্নত আদায় করা যাবে। তবে এরূপ যদি কোন আশংকা থাকে যে, সূর্য উদয় হওয়ার পর সুন্নত নামাজ আদায় করার সময় বা সুযোগ পাওয়া যাবে না তাহলে সূর্যোদয়ের পূর্বেই সূন্নাত আদায় করে নিতে পারবে। ফজরের সুন্নাত ব্যতীত অন্য কোন নামাজের সুন্নতের ক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। ফজরের সুন্নত সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিধায় উপরোক্ত মাসয়ালা রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ