সামাজিক নিরাপত্তা কি | সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায়

 

সামাজিক নিরাপত্তা কি | সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায়

সামাজিক নিরাপত্তা কি

সামাজিক নিরাপত্তা (social security) বর্তমানকালে একটি অপরিহার্য ও কল্যাণমূলক কর্মসূচি হিসেবে স্বীকৃত। এটি আধুনিককালে মানুষের জীবনে অদৃষ্টপূর্ব অবস্থার হাত থেকে রক্ষা ও সাহায্য করার জন্য রাষ্ট্র ও সমাজের তরফ থেকে একটি সহায়তামূলক কর্মসূচি। সামাজিক নিরাপত্তা ধারণার সঙ্গে শিল্পোত্তর যুগের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। সামাজিক নিরাপত্তা প্রত্যয়টি বিশ্লেষণ করলে কতকগুলো বিষয় বের হয়ে আসে। যেমন: অসুস্থতা, রোগ, দুর্ঘটনা, বেকারত্ব, বৃদ্ধ বয়সের নির্ভরশীলতা, ইত্যাদি। আবার এ বিষয়গুলোর নৈতিবাচক প্রভাবে কল্যাণমূলক পদক্ষেপ হিসেবে জন্ম নিয়েছে, পারিবারিক সাহায্য এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক ব্যবস্থা। যা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে আইনসিদ্ধ ও প্রতিষ্ঠিত। সন্তান সম্ভাব্যতা, পঙ্গু, বার্ধক্য সামাজিক রীমা ব্যবস্থা, সামাজিক সাহায্য, পারিবারিক সাহায্য এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক ব্যবস্থ। যা সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে আইনসিদ্ধ ও প্রতিষ্ঠিত।

সাধারণভাবে বলা যায়, আধুনিক শিল্প সমাজের পেশাগত দুর্ঘটনা, অকাল মৃত্যু, অসুস্থতা, বেকারত্ব, বার্ধক্যজনিত নির্ভরশীলতা ইত্যাদি আকস্মিক দুর্যোগ মোকাবিলায় গৃহীত অর্থনৈতিক প্রতিরক্ষামূলক কর্মসূচিই সামাজিক নিরাপত্তা

সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায়

বিভিন্ন মনীষী বিভিন্নভাবে সামাজিক নিরাপত্তার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হল।

স্যার উইলিয়াম বিভারেজের মতে, “বেকারত্ব, অসুস্থতা বা দুর্ঘটনা, বৃদ্ধ বয়সে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ, পরিবারের উপার্জনশীল ব্যক্তির মৃত্যু অথবা জন্ম, মৃত্যু ও বিয়ের সময় অস্বাভাবিক ব্যয় নির্বাহের জন্য কোন পরিবারের উপার্জন বা আয়ের পথ বন্ধ হলে যে কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের উপার্জন বা আয়ের নিশ্চয়তা দান করা হয় তাই সামাজিক নিরাপত্তা

W. A. Friedlander এর মতে, “অসুস্থতা, বেকারত্ব, উপার্জনকারীর মৃত্যু, বার্ধক্য কিংবা নির্ভরশীলদের অক্ষমতা এবং দুর্ঘটনা ইত্যাদি যখন ব্যক্তি তার নিজের চেষ্টায় মোকাবিলা করতে পারে না তখন সামাজিক আইনের মাধ্যমে যেসব প্রতিরক্ষামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাকেই সামাজিক নিরাপত্তা বলে।

সামাজিক নিরাপত্তা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা যে বক্তব্য পেশ করেছে তা হল, “সামাজিক নিরাপত্তা হল এমন একটি নিরাপত্তা যা যথোপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজকর্তৃক প্রদান করা হয় যখন মানুষ বিশেষ বিপদাপদের সম্মুখীন হয়। এসব বিপদাপদ এমনকি আকস্মিক দুর্ঘটনা যে স্বল্প আয়ের ব্যক্তিবর্গ স্বীয় সামর্থ্য ও উদ্যোগের দ্বারা মোকাবিলা করতে অপরাগ।”

উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর বিশ্লেষণে বলা যায়, সামাজিক নিরাপত্তার সর্বজন গ্রাহ্য কোন সংজ্ঞা নেই, তবে সমাজস্থ মানুষের আর্থসামাজিক ও স্বাস্থ্যগত বিপদাপদ ও দুর্যোগে রাষ্ট্রীয় সাহায্য ও সেবাদান কর্মসূচির মধ্যে এর অস্তিত্বের স্বীকৃতি পাওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ