চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি | প্রেক্ষাপট/পটভূমি এবং উদ্দেশ্য/লক্ষ্যসমূহ

  

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হলো কোম্পানির রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য জমিদারের সাথে সম্পাদিত একটি চুক্তির সমতূল্য ব্যবস্থা। ১৭৯৩ সালে ২২ মার্চ গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিস কর্তৃক এটা ঘোষিত হয়। কিন্তু আইডিয়া হিসেবে এ বন্দোবস্ত কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞ মহলে আলোচিত হতে থাকে প্রায় দু'দশক আগে থেকেই। বিমূর্তভাবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আইডিয়া প্রথম দেন সমকালীন ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ আলেকজান্ডার দাও ও হেনরি পেটুল্লো। দাও- পেটুল্লো প্রদত্ত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আইডিয়া থেকে প্রথম বিমূর্ত রূপ দেন কাউন্সিলর ফিলিপ ফ্রান্সিস। কিন্তু ফিলিপ ফ্রান্সিসের বন্দোবস্তের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় নি। তবে অনেকটা ব্রিটিশ সরকারকে ভূমি রাজস্ব সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়ে ছিল। ফিলিপ ফ্রান্সিসের পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে পরে ব্রিটিশ সরকার ১৭৮৪ সালে Pitt India Acts পাস করেন। এ Pitt India Acts এ ৩৯ নং ধারায় রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়ে ছিল। Pitt India. Acts পাস হওয়ার পর কাউন্সিলর চার্লস স্টুয়ার্ট প্রথম দিকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। এবং Pitt India Acts এর ৩৯ নং ধারা মোতাবেক চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস এর পক্ষপাতী ছিলেন না। তাই দেখা যায় চার্লস স্টুয়ার্টের পরিকল্পনা প্রকাশিত হলেও তা কার্যকরী ছিল না। চার্লস স্টুয়ার্টের পরিকল্পনার কিছুদিন পরে কোম্পানি দেখলেন যে ভারতে কোম্পানির রাজস্ব নিয়ে যে সমস্যা তা সমাধান করার একমাত্র উপায় হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করার মাধ্যমে রাজস্ব সমস্যা সমাধান করা। তাই ১৭৮৬ সালে কোর্ট অব ডাইরেক্টরস রাজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য লর্ড কর্নওয়ালিসকে গভর্নর জেনারেল হিসেবে ভারতে পাঠান। লর্ড কর্নওয়ালিস ভূমি রাজস্ব সমস্যা সমাধান করার লক্ষ্যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কার্যকরী করার জন্য কার্যক্রম শুরু করেন। তাই ১৭৯০ সালে দশসালা বন্দোবস্ত করা হয়। ১৭৯২ সালের শেষের দিকে কোর্ট অব ডাইরেক্টরস চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার পক্ষে মতামত দিলে কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালে ২২ মার্চ দশসালা বন্দোবস্তকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলে ঘোষণা করেন।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রেক্ষাপট/পটভূমি

১৯৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হলেও এ জন্য অনেক বিষয় জড়িত ছিল। তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

১. দাও-এর মতবাদ

১৭৬৫ সালে কোম্পানির দেওয়ানি লাভের পর বাংলার চরম অবস্থা উপলব্ধি করে সমস্যার সমাধানকল্পে শাসন সম্পর্কে দুজন পরামর্শদাতার নাম ইতিহাসে খ্যাত। এরা হলেন আলেকজান্ডার দাও ও হেনরি পেটুল্লো। দাও কোম্পানি শাসনকার্য পরিচালনার প্রতি উপহাস করে বলেন যে, নবাবি শাসননীতি ছিল “মধুর চাকের মধু খাওয়া, চাক ধ্বংস করা নয়, কিন্তু ইংরেজরা এর মধু খেয়ে মধুর চাক পর্যন্ত ধ্বংস করে দেয়।" তাই কোম্পানির অত্যাচারী শাসন থেকে বাংলার অর্থনীতিকে পুনর্জীবিত করার জন্য তিনি ভূমি সংস্কারের পরামর্শ দেন। এতে তিনি বলেন-

ক. বর্তমান বার্ষিক রাজস্ব হার বজায় রেখে সরকার কর্তৃক নগদ সেলামির পরিবর্তে ভূমি চিরস্থায়ীভাবে ব্যক্তিগত মালিকানায় ছেড়ে দেয়া।

খ. একসাথে সমস্ত ভূমি বিক্রয়জনিত বাজার মূল্য হ্রাস এড়ানোর জন্য সরকার কর্তৃক সমগ্র ভূমির এক-চতুর্থাংশ বিক্রি করে চার বছরে বিক্রয়কার্য সম্পন্ন করা।

গ. বিক্রয়লব্ধ টাকা বিনিয়োগ করে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি করা। এর ফলে প্রতিবছর অপ্রিয় ভূমি রাজস্ব হার থেকে সরকার রেহাই পেতে পারে। এছাড়া অর্থনীতি সজীব হয়ে উঠলে সরকার নানা প্রকার নতুন কর বসাতে পারবে।

ঘ. জমিতে একচেটিয়া মালিকানা রোধ করার জন্য ভূমি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়া। দাও এমত দ্বারা বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়া সম্ভব বলে মনে করতেন।

২. বার্ষিক জমিদারি বন্দোবস্তের কুফল

ওয়ারেন হেস্টিংসের 'আজীবন বন্দোবস্ত' ও ফিলিপ ফ্রান্সিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পরিকল্পনা দুটো বোর্ড অব ডাইরেক্টরে বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হলে কোর্ট উভয় পরিকল্পনাই আপাতত বর্জন করে এবং আদেশ দেয় যে, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সরকারের উচিত বার্ষিক মেয়াদে জমিদারদের সাথে ভূমি বন্দোবস্ত করা। ইজারা প্রথা পরিত্যাগ করে শুধু জমিদারদের সাথে ভূমি বন্দোবস্ত করার জন্য কোর্টের সিদ্ধান্ত ছিল ভূমিতে জমিদারিত্বের স্বীকৃতি। যদিও কোর্ট ফ্রান্সিসের পরিকল্পনাকে একটি অতি প্রশংসনীয় ব্যবস্থা বলে গ্রহণ করে তথাপিও তা কার্যকরী করা সম্ভব হয় নি। কারণ, এর পশ্চাতে জানা দরকার (১) স্থায়ী রাজস্ব ব্যবস্থা কি হওয়া উচিত, (২) গভর্নর জেনারেলের পরিকল্পনাকে পাশ কাটিয়ে একজন কাউন্সিলারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক অসুবিধা। তাই এটা কার্যকরী করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে না হলেও অনেকটা অবদান ছিল।

৩. চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য ডাইরেক্টর সভার নির্দেশ

পীটস ইন্ডিয়া এ্যার পাস হওয়ার পর বাংলার রাজস্ব সম্পর্কে কোম্পানির নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ইন্ডিয়া অফিসে বাংলার ভূমি ব্যবস্থা কি হওয়া উচিত এ নিয়ে এককভাবে চিন্তা করার কারো সুযোগ নেই। হয়ত যোগ্যতাও নেই। এ ব্যাপারে যারা গভীর চিন্তা করেছিলেন তারা হলেন ফিলিপ ফ্রান্সিস, জন শো'র ও চার্লস স্টুয়ার্ট। এরা সবাই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবক্তা ছিলেন। যা হোক এমতাবস্থায় কোর্ট অব ডাইরেক্টরস তাদের সমস্ত পরিকল্পনা, স্মারকপত্র, চিঠিপত্রসমূহ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বাংলার জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্তুই একমাত্র কাম্য। ১৭৮৬ সালের ১১ এপ্রিল লেখা পত্রে কলকাতা কর্তৃপক্ষকে এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ফলে এ বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পথ প্রশস্ত হয়।

৪. জন শো'র ও কর্নওয়ালিস বিতর্ক

১৭৮৬ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কোর্ট অব ডাইরেক্টরস লর্ড কর্নওয়ালিসকে গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কোর্ট চিরস্থায়ী বন্দোবস্তকে কার্যকরী করার জন্য কর্নওয়ালিসকে উপযুক্ত মনে করেন। গভর্নর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হয়ে কর্নওয়ালিস চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কার্যকরী করার জন্য জোর প্রস্তুতি শুরু করেন। তিনি কোর্টকে আশ্বাস দেন যে পরবর্তী বছরই (১৭৮৮ সালে) এ ব্যবস্থা কার্যকরী করতে তিনি সক্ষম হবেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান কর্নওয়ালিস-এর প্রধান রাজস্ব উপদেষ্টা ও বোর্ড অব রেভিনিউর প্রেসিডেন্ট জন শো’র। শোর যুক্তি দেখান যে, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কার্যকরী করার পূর্বে জানা দরকার :

  • ক. জমিদার, তালুকদার ও রায়তের বর্তমান আর্থিক অবস্থা।
  • খ. মুঘল শক্তির অবক্ষয়ের আগে জমিদার ও রায়তের অধিকার;
  • গ. মুঘল শক্তির পতন পর্বে রায়তের খাজনা সংক্রান্ত আইন ও রেওয়াজ,
  • ঘ. দেওয়ানি লাভের পর জমিদার কর্তৃক আরোপিত নতুন আবওয়াব, মামণ ইত্যাদি;
  • ঙ. সাধারণ রায়তের স্বার্থরক্ষার উপায়;
  • চ. বর্তমান রাজস্ব ধার্য ব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ ও তা দূর করার উপায়;
  • ছ. ১৭৭২ সাল থেকে প্রত্যেক জমিদারির বিস্তারিত জমা, উত্তল ও বাকি হিসাব সংগ্রহ।

উপরিউক্ত বিষয় গবেষণার পর কর্নওয়ালিস আশাব্যক্ত করেন যে, এখন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করা হবে। কিন্তু শো’র-এর জন্য তা হয় নি। ফলে একটু দেরী হয়।

৫. দর্শসালা বন্দোবস্ত (১৭৮৯-৯০)

কর্নওয়ালিস ও শো'র ছিলেন দুই জন দুই শ্রেণীর। এছাড়া কোর্ট অব ডাইরেক্টরস এর নির্দেশ নামায় (১২ এপ্রিল ১৭৮৬) বলা হয়েছিল যে, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উদ্দেশ্যে একটি স্বল্পস্থায়ী বন্দোবস্ত করা উচিত। কোর্টের অনুমোদন লাভের পর সেই স্বল্পমেয়াদি বন্দোবস্তুকেই চিরস্থায়ী বলে ঘোষণা করা হবে। সে নির্দেশ মোতাবেক গভর্নর জেনারেল ইন কাউন্সিল ১৭৮৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বিহার প্রদেশের জন্য দশসালা বন্দোবস্তের প্রস্তাব করেন। কিন্তু শো'র ও কর্নওয়ালিসের মধ্যে বিতর্ক দেখা দেয়। এতে প্রস্তাব ছিল যে, “জমিদারদের সাথে বন্দোবস্ত করা হোক এবং নোটিস জারি করা হোক যে কোর্ট অব ডাইরেক্টরস কর্তৃক অনুমোদিত হলে তা চিরস্থায়ী বলে গণ্য হবে এবং দশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর বন্দোবস্তে কোন রদবদল করা হবে না। এক পর্যায়ে বিতর্ক দেখা দেয় ঘোষণা নিয়ে। শেষে ১৭৮৯ সালে বিহার প্রদেশে দশসালা বন্দোবস্ত প্রবর্তন করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয় যে, বাংলা সন ১১৯৭ সালের ১ বৈশাখ থেকে দশ বছরের জন্য জমিদারের সাথে ভূমি বন্দোবস্ত করা হোক। বন্দোবস্তের নাম দেয়া হয় দশসালা।”

৬. কৃষি বিপ্লব ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত

এ অবস্থায় কৃষিক্ষেত্রেও কর্নওয়ালিস কিছুটা উন্নতি সাধন করেন। এছাড়া জন শো'র ও কর্নওয়ালিসের বিতর্কের সমস্ত কাগজপত্র জমা দেন। এর সাথে জমা দেন দশসালা বন্দোবস্তের দলিলপত্র। অবশেষে অনেক পরীক্ষা, নিরীক্ষার পর ১৭৯২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এ পত্রে কোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কর্নওয়ালিসকে জানায়। এভাবে ১৭৯৩ সালে ২২ মার্চ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ঘোষণা করেন লর্ড কর্নওয়ালিস অর্থাৎ দশসালাকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে ঘোষণা করেন।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উদ্দেশ্যসমূহ

নিম্নে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উদ্দেশ্য/লক্ষ্য বর্ণনা করা হলো।

১. বৃহৎ জমিদারিগুলো খণ্ডিকরণ: ১৭৯০ সালে দশসালা বন্দোবস্তের সময় বাংলায় সরকারি রাজস্ব জমার পরিমাণ ছিল ১৯০৪০০০০ সিক্কা টাকা। বাংলায় অনেক জমিদার থাকলেও বড় বড় অর্থটি জমিদার পরিবারের মোট রাজস্ব প্রায় অর্ধেক টাকা দিতো। এতে দেখা যায় সরকার নির্ভরশীল ছিল রাজস্বের উপর। আর এ রাজস্ব বেশি আসে ৮টি জমিদারের কাছ থেকে। ফলে ঐ সময় বড় বড় জমিদার ধ্বংস করে ছোট ছোট জমিদার তৈরি করার কথা ব্যক্ত করা হয়। কেননা বড় বড় জমিদার ঐক্যজোট করলে কোম্পানির শাসনকে উৎখাত করতে পারতো।

২. সরকারি রাজস্ব নিশ্চিত করা : লর্ড কর্নওয়ালিস মনে করেন যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তনের ফলে জমিদারগণ জমির মালিক হবে এবং তারা জমির উন্নয়ন করবে ও প্রজা সাধারণের জন্য মঙ্গলের চেষ্টা করবে। এতে করে কোম্পানির রাজস্ব নিয়মিত আদায় হবে।

৩. প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জন : প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্য দূর করে ব্রিটিশ সভ্যতা সুলভ একটি শান্তি ও সুশৃঙ্খল শাসন প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ ছিল কর্নওয়ালিসের উপর। অল্পসংখ্যক ইউরোপীয় অফিসার নিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো মজবুত করা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। তাত্ত্বিকগণ ভেবে ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত সময় পাবে কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয় নি। ফলে দেখা যায় সরকার যা আশা করেছিল ফলাফল তার বিপরীত হয়েছে।

৪. কৃষি বিপ্লব : সমকালীন ব্রিটেনে যে ভূস্বামী শ্রেণির কৃষি নেতৃত্বে কৃষি বিপ্লব সম্ভব হয়। তেমনি জমিদারগণের নেতৃত্বে বাংলাদেশেরও অনুরূপ কৃষি বিপ্লব আনয়ন করা ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রণেতাদের উদ্দেশ্য। তারা তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে ব্রিটেনে কৃষি বিপ্লব হয়েছে Land Lord কর্তৃক ভূমিতে পুঁজি বিনিয়োগের ফলে। Land Lord কর্তৃক ভূমিতে পুঁজি বিনিয়োগের কারণ ভূমিতে তাদের ব্যক্তিমালিকানা।

৫. জমিদারের আনুগত্য লাভ: চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আর একটি উদ্দেশ্য হলো এ ব্যবস্থার ফলে জমিদারগণ অধিক সুবিধা পাবে এবং বিনিময়ে তারা ইংরেজদের অনুগত থাকবে। ফলে এদেশে স্বার্থ আদায় অনেকটা সহজ হবে।

৬. প্রাদেশিক কাউন্সিলের সুপারিশ : বিভিন্ন প্রাদেশিক কাউন্সিলের সুপারিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের অন্যতম উদ্দেশ্য। এদেশে কর্মরত প্রত্যেকটি প্রাদেশিক কাউন্সিলর চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মত দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ