নিরক্ষরতা দূরীকরণের উপায় কি কি

 

নিরক্ষরতা দূরীকরণের উপায় কি কি

নিরক্ষরতা দূরীকরণের ব্যবস্থা ও উপায়

নিরক্ষরতা বাংলাদেশের ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা। তাই এ সমস্যার সমাধান জরুরি।  নিম্নে বাংলাদেশে নিরক্ষরতা দূরীকরণের উপায় আলোচনা করা হল।

১. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : বাংলাদেশে দ্রুতগতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে। ফলে বিপুল জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রিত হলে বাংলাদেশে নিরক্ষরতা কমবে।

২. শিক্ষা উপকরণের সহজলভ্যতা : বাংলাদেশে নিরক্ষরতার জন্য শিক্ষা উপকরণের অভাব দায়ী। সেজন্য শিক্ষা উপকরণের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে নিরক্ষরতা দূরীকরণ সম্ভব হবে

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবও বাংলাদেশে নিরক্ষরতার জন্য দায়ী। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নিরক্ষরতা দুর করা সম্ভব।

৪. শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি : বাংলাদেশে নিরক্ষরতার জন্য শিক্ষকের অভাবও দায়ী। তাই প্রয়োজনীয় শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে নিরক্ষরতা দূরীকরণ সম্ভব হবে।

৫. বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি : বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। তাই শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ আরও বেশি করতে হবে। তাহলে নিরক্ষরতা দুর হবে।

৬. সচেতনতা বৃদ্ধি : বাংলাদেশে সচেতনতার অভাবও নিরক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাই জনগণকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে।

৭. দরিদ্রতা দূরীকরণ : দরিদ্রতা বাংলাদেশে নিরক্ষরতার জন্য দায়ী। দারিদ্র্যের কারণে অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলে যায় না। তাই দরিদ্রতা দূরীকরণের মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূরীকরণ সম্ভব।

৮. অবৈতনিক শিক্ষা চালু : বাংলাদেশে নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য সবক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অবৈতনিক শিক্ষা চালু করতে হবে। তাহলে জনগণ শিক্ষার দিকে ঝুঁকবে।

৯. বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ : যারা দরিদ্র ও গরিব তাদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করতে হবে। এতে করে তারা শিক্ষিত ও উৎসাহী হবে। ফলে নিরক্ষরতা কমে আসবে।

১০. উপযুক্ত নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ : বাংলাদেশে নীতি ও পরিকল্পনার অভাবে নিরক্ষরতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই উপযুক্ত নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিরক্ষরতা দুর করা সম্ভব।

১১. কর্মমুখী শিক্ষা চালু : বাংলাদেশে শিক্ষার সাথে কর্মের কোন সম্পর্ক নেই। ফলে শিক্ষা শেষে বেকার থাকে বলে জনগণ শিক্ষিত হতে চায় না। তাই কর্মমুখী শিক্ষা প্রণয়ন করতে হবে যেন শিক্ষা শেষে বেকার না থাকে।

১২. গণশিক্ষা চালু : বাংলাদেশে বয়স্ক লোকদের মধ্যে নিরক্ষরতার হার বেশি। তাই গণশিক্ষা চালু করার মাধ্যমে বয়স্ক লোকদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাহলে নিরক্ষরতা কমবে।

১৩. নারী শিক্ষার প্রসার : বাংলাদেশে নারীরা শিক্ষার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আছে। ফলে নিরক্ষরতা বেড়েই চলেছে। তাই নিরক্ষরতা দুর করতে হলে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।

১৪. শিক্ষার সমন্বয় সাধন : বাংলাদেশে বহুমুখী শিক্ষা প্রচলিত। ফলে জনগণ শিক্ষা সম্পর্কে সন্ধিহান। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্বয়ের মাধ্যমে সর্বত্র একই পদ্ধতির শিক্ষা চালু করতে হবে। তাহলে নিরক্ষরতা কমবে।

১৫. ভাসমান ও বস্তিবাসীর জন্য শিক্ষা : বাংলাদেশে ভাসমান ও বস্তিবাসীদের শিক্ষার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে তারা নিরক্ষর থেকে যাচ্ছে। তাই ভাসমান ও নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে নিরক্ষরতা কমবে।

উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, নিরক্ষরতা বাংলাদেশের জন্য একটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা। বাংলাদেশে নিরক্ষরতার প্রভাব সর্বক্ষেত্রে বিদ্যমান। ফলে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই খুব শীঘ্রই এ সমস্যা দুর করা প্রয়োজন। আমি মনে করি, উপরিউক্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশে নিরক্ষরতা দূরীকরণ সম্ভব হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ